হারিয়ে যেতে বসা কিছু প্রযুক্তি



প্রযুক্তির বিকাশের গতি এতটাই বেড়ে গেছে যে, এখন একটা সামগ্রী কিনে আনতে না আনতেই শোনা যায় সেটাও নাকি পুরোনো ধাঁচের। কেউ একজন আমাকে অনেকদিন আগে বলেছিলেন, প্রযুক্তি নাকি বরফের  গোলার মত। বরফের  গোলা যেমন নিজের গায়ে আরো আরো বরফ  নিতে নিতে বিশালাকার ধারন করে তেমনি প্রযুক্তিও অতীত এবং বর্তমানের সংমিশ্রনে যে গতি প্রাপ্ত হয়েছে, তাতে আমার মাঝে মাঝে ভয় হয় আসলে এর শেষ কোথায়। শেষ যেখানেই হোক না কেন, পৃযুক্তির গতির সাথে তাল মেলাতে মেলাতে আমরা অনেক প্রযুক্তির কথা ভূলতে বসেছি। আজ তেমনি হারিয়ে যেতে বসা কিছু প্রযুক্তিগুলো আপনাদের আরেকবার মনে করিয়ে দেব। আসুন তাহলে কথা না বলে শুরু করা যাক

সুপার ৮মিঃমিঃ হ্যান্ডি ক্যাম

kodak_camera_instamatic_m22_face
আজকাল হাতে হাতে হ্যান্ডি ক্যাম আর ডিজিটাল ক্যাম থাকলেও কয়েক দশক আগেও ছিল তা দুঃসাধ্য ব্যাপার। সেই ১৯৬৫ সালে কোডাকই প্রথম কোম্পানী যা মার্কেটে নিয়ে বিখ্যাত ৮মিমি হ্যান্ডি ক্যাম। সাথে সাথে সয়লাব হয়ে যায় মানুষের ঘরে ঘরে। পার্টিতে নিয়ে আসে আলাদা মাত্রা। তবে এই ক্যাম এখন শো কেস  এ ই বেশী শোভা পায়

বেটামেক্স

betamex
আপনারা নিশ্চই ভিসিআর ডিভাইসের ভিএইচএস ক্যাসেট এর সাথে সবাই পরিচিত। বেটামেক্স হচ্ছে সেই VHS এর ঠিক আগের প্রযুক্তি। ১৯৭৫ সালে সনি মার্কেটে এই বেটামেক্স এনে রীতিমত সাড়া ফেলে দেয়।

VHS

vhs2
সনির বেটামেক্সের পরের প্রযুক্তি হলেও এটি মার্কেটে আনে JVC এবং সে যে কি পরিমান মার্কেটে দাপটের সাথে রাজত্ব করেছে তা আমরা ভালোই জানি এবং এর বিলুপ্তিও আমরা নিজের চোখেই অবলোকন করেছি।

লেজার ডিস্ক প্লেয়ার

laser disk
আজকের ডিজিটাল ভার্সেটাইল ডিস্ক (DVD) মার্কেটে আসার আগে এই লেজার ডিস্কই ছিল উচ্চবিত্ত পরিবারের বিনোদনের খোরাক। তবে  DVD মার্কেটে আসার পরে এর করুনাবসান L হয়।

ফোনোগ্রাফ

gramophone
নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মনে হয় প্রয়োজন নাই। অনেকে গ্রামোফোন নামেও চেনেন। ১৮৭৭ সালে টমাস এডিসনের জুগান্তকারী এই আবিস্কারের মোহ থেকে শত বছরেও মানুষের মুখ ফেরাতে পারি নাই অন্য কোন ডিভাইস। এখনও শৌখিনেরা ড্রয়িং রুমে গ্রামোফোন শুনে নষ্টালজিক হয় L

TURNTABLES

turntables
আমাদের দেশে সরাসরি এই জিনিসের ব্যবহার ছিল বলে আমার জানা নেই। তবে এই জিনিসই এখন আমাদের দেশের DJ পার্টি এবং রেকর্ডিং স্টুডিওতে ব্যবহার করা হয়।

HM Radio

HM radio
বিংশ শতাব্দীতে এই কালচার স্টার্ট হলেও জরিপে দেখা যায় এখনও ৬ মিলিয়ন লোক এই প্রযুক্তির সাথে প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষো ভাবে সংযুক্ত। এই প্রযুক্তির সাহায্যে রেডিও অপারেটররা শর্টওয়েভ রেডিও কমিউনিকেশানে কানেক্টেড থাকে। এ পর্যন্ত হলিউডের বিভিন্ন বিগ বাজেটে র মুভিতেও মাঝে মাঝে এই ডিভাইস ফিচারড হয়েছে।

REEL TO REEL

Reel-to-reel_recorder_tc-630
ক্যাসেট থেকে ক্যাসেটে গান রেকর্ড করার জন্যে সর্বপ্রথম এই জন্ত্রটিই মার্কেটে সাড়া জাগায়। জদিও এখন কোথাও ব্যবহৃত হয়না। তবে বছর খানেক আগে আমার এলাকায় একটি রেকর্ডিং সেন্টারে এই জিনিসের কাজ কাম দেখার সুজোগ হয়েছিল

ট্রান্সিসটর রেডিও

transistor
এখনও গ্রামে আমাদের অনেক ময় – মুরুব্বী আছেন যারা রেডিওকে ট্রান্সিসটর নামেই ডাকেন। অনেকেই হয়ত অবাক হয় রেডিও কেন ট্রান্সিসটর বলা হয়? এটা হয়েছে মূলত তারা যে রেডিওতে বিনোদনের সকল খোরাক পেয়ে থাকতেন সেটিই ছিল তখনকার মূল্যবান ট্রান্সিসটার রেডিও।

ক্যাসেট টেপ

black_cassette_tape
একটু আগে যে রিল টু রিল যন্ত্রটি দেখিয়েছিলাম, সেটিতে মূলত এই ধরনের ক্যাসেটই রেকর্ড করা হত। আর এর ব্যাপারে নতুন করে বলার কিছু নেই। এমন কোন টিউনার হয়ত খুজে পাওয়া যাবে না যে কি না এই টেপ একবার ভেঙ্গে এর নাড়ী নক্ষত্র পরীক্ষা করে নাই।

বুম বক্স

boombox2
ক্যাসেট টেপ বাজানোর যে যন্ত্র, যেটা আমাদের কাছে ক্যাসেট প্লেয়ার নামে পরিচিত তা মূলত বুম বক্স নামেই মার্কেটে লিলিজ হয় ১৯৭০ সনে। শুরুর দিকে খুবই ভারী ভারী হত এগুলো। তবে মজার কথা হচ্ছে সাইজ আর ওজন কমতে কমতে এখন মার্কেট থেকেই ভ্যানিশ হয়ে গেছে এই জিনিস।

টেলিগ্রাফ

telegraph
আজকের টেলেক্স অথবা ফ্যাক্স ম্যাশিনের পথিকৃতই ছিল এই টেলিগ্রাফ যন্ত্র। মিলিটারি, শিপিং অপারেটর এবং সাধারন মানুষের দ্রত যোগাযোগের ক্ষেত্রে সেই আমলে এটাই ছিল অন্ধের যষ্টি। তবে আজকাল এর দেখা মেলাই ভার।



                                                                          - সমাপ্ত -



0 comments:

Post a Comment